নয়াদিল্লি: বেকারত্বে গত ৪৫ বছরের রেকর্ড ছুঁয়েছে দেশ৷ পিছিয়ে নেই বাংলাও৷ ভোটের বাজারে কর্মসংস্থান ইস্যু বিরোধীদের প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠলেও দেশের শিল্প ও কর্মসংস্থানের পরিস্থিতি যে ভয়াবহ তা ফের একবার প্রমাণ করল দেশের পরিসংখ্যান৷ প্রকাশ্যে এল দেশের শিল্প বাজারের বিবর্ণ বিজ্ঞাপন৷
পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মার্চে শিল্প বৃদ্ধি নেমেছে শূন্যেরও ০.১ শতাংশ নিচে। অর্থাৎ সরাসরি কমেছে শিল্পোত্পাদন। ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে শিল্প বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৩.৬ শতাংশ। ৩ বছরের সবথেকে কম। মার্চে কল-কারখানায় উত্পাদন সরাসরি কমেছে। বৃদ্ধির হার কমেছে বিদ্যুৎ ও খনন শিল্পে। সরাসরি উত্পাদন কমেছে ভোগ্যপণ্যেরও। বিশ্বে দ্রুততম আর্থিক বৃদ্ধির দেশে শিল্পের ছবি এমন বিবর্ণ কেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ভোটের বাজারে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আসতেই নিঃসন্দেহে দুশ্চিন্তা বাড়াবে মোদি সরকারের৷
সরকারের লক্ষ্য ছিল, উৎপাদনক্ষেত্রে বৃদ্ধির হারকে বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৪ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার, ২০২২ সালের মধ্যে জিডিপিতে উৎপাদনক্ষেত্রের ভাগকে ১৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা এবং উৎপাদন শিল্পে ১০ কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। কিন্তু ৫ বছর পর তার কী অবস্থা?
লাইভ মিন্টের সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (CMIE)-র রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে নতুন বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমেই কমেছে। এমনকী পরিস্থিতি এমনই যে বিনিয়োগের পরিমাণের হিসেবে মোদী সরকার পিছিয়ে পড়েছে পূর্ববর্তী ইউপিএ-এক ও ইউপিএ-দুই-এর থেকেও। লাইভ মিন্টের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শিল্পবৃদ্ধির মাপকাঠিতে অ্যানুয়াল সার্ভে অফ ইন্ডাস্ট্রিজ (ASI)-এর রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, মোদী সরকারের প্রথমার্ধে (২০১৪-১৫ থেকে ২০১৬-১৭ পর্যন্ত) শিল্পে কর্মসংস্থানের হার নিম্নমুখী। ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে পৃথিবীর মোট রফতানির মাত্র ১.৭ শতাংশ গিয়েছে ভারত থেকে। যা ২০১৪-য় ছিল ১.৬ শতাংশ। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার তালিকায় ভারত রয়েছে ১৫ তম স্থানে, যেখানে বিশ্বের মোট রফতানির ১৭.৪৮ শতাংশই এসেছে চিন থেকে। চিনের পরেই তালিকায় রয়েছে জার্মানি (১০.৪ শতাংশ), আমেরিকা (৯.৩ শতাংশ) ও জাপান (৫ শতাংশ)।