শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে

শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে

কলম্বো: আর অন্তর্বর্তীকালীন কিংবা অস্থায়ী নয় এবার পাকাপাকিভাবেই নির্বাচনের মাধ্যমে জিতে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন রনিল বিক্রমসিংহে। প্রসঙ্গত গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে নিজের পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার পরেই লঙ্কান পার্লামেন্টের স্পিকার আজ বুধবার ২০ জুলাই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। জানা যাচ্ছে এই নির্বাচনেই বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন রনিল। তবে শ্রীলঙ্কার পরবর্তী প্রেসিডেন্টের দৌড়ে তিনি প্রথম থেকেই বেশ এগিয়ে ছিলেন। এই নির্বাচনে তাঁকে কাঁটায় কাঁটায় টক্কর দিতে পারতেন বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমদাসা। তবে গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবারই তিনি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে নিজের মনোনয়ন সরিয়ে নেন। যার জেরে এই নির্বাচনে জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল রনিল বিক্রমসিংহের।

উল্লেখ্য, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে সাজিথের একটি ট্যুইট ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় জল্পনা। সেখানে তিনি লেখেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে সংসদে যাচ্ছি। মাতৃভূমি ও শ্রীলঙ্কার মানুষের স্বার্থে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেব।’ এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ফের ট্যুইট করেন তিনি।  তখন তিনি লেখেন, ‘দেশ ও দেশবাসীর স্বার্থে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছি। আমাদের জোট ও বিরোধীরা সকলে মিলে ডুলাস আলাহাপেরুমাকে জেতানোর চেষ্টা করব।’ উল্লেখ সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা ডুলাস দীর্ঘদিন ধরেই শ্রীলঙ্কার সংসদের সদস্য। মহিন্দা রাজাপক্ষে সরকারের ক্যাবিনেটেও ছিলেন তিনি। তবে এত কিছুর পরেও শেষরক্ষা হয়নি। কারণ শেষমেশ বাজি মেরেছেন সেই রনিল বিক্রমসিংহেই। 

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে গোতাবায়া প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছিলেন রনিল বিক্রমসিংহে। কিন্তু সেই সময়ও তাঁকে ঘিরে বিতর্কের শেষ ছিল না। কারণ রনিল অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণের পরেই এই দ্বীপরাষ্ট্রে নতুন করে জ্বলে ওঠে বিক্ষোভের আগুন। এক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, একা গোতাবায়া নয়, দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে রনিল বিক্রমসিংহেকেও পদত্যাগ করতে হবে। এই দাবিতেই তারা গত শনিবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ও শেষে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন পর্যন্ত দখল করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরিস্থিতি এত ভয়াবহ হয় যে রনিল বিক্রমসিংহেকে নতুন করে জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়। শোনা যায়, তিনি সেনা আধিকারিকদের নির্দেশ দেন বিক্ষোভ থামাতে প্রয়োজনীয় যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। এমতাবস্তায় এবার নির্বাচনের মাধ্যমে পাকাপাকিভাবে প্রেসিডেন্টের গদি দখল করছেন রনিল বিক্রমসিংহে। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামীতে শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভের ঝাঁজ আরও বহুগুণ বাড়বে এই দ্বীপরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্টকে কেন্দ্র করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 1 =