নয়াদিল্লি: বিপুল জনসমর্থন নিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য দিল্লির মসনদে পা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ কিন্তু, সদ্য ক্ষমতায় ফিরেও মোদির মাথার উপর ঝুলছে কর্মসংস্থানের খাঁড়া৷ বছরে ২ কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ও জনতার বিপুল প্রত্যাশা মাথায় নিয়ে শুক্রবার পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করতে চলেছেন মোদির৷ ইন্দিরা গান্ধী পর দ্বিতীয় মহিলা হিসাবে কেন্দ্রীয় অর্থ বাজাটে পেশ করতে চলেছেন নির্মলা সীতারমন৷ শুক্রবার বাজেট পেশের আগে আজ রাজ্যসভায় পেশ হল আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্ট৷ কিন্তু, সেই রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে৷
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার বয়স বাড়াতে পারে কেন্দ্রের মোদির সরকার৷ আর্থিক সমীক্ষায় এই নিয়ে ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে৷ কেন্দ্রের আর্থিক সমীক্ষায় চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার বয়স ৬০ থেকে আরও ৫-১০ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ আর এই ইঙ্গিত দেশে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে৷ কেননা, লোকসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রকওয়াড়ি শূন্যপদের তথ্য পেশ করে কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষকুমার গঙ্গওয়ার জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ও তার আওতায় থাকা একাধিক দপ্তরে ফাঁকা পড়ে রয়েছে প্রায় ৭ লক্ষ শূন্যপদ৷ প্রশ্ন উঠছে, ৭ লক্ষ শূন্যপদ পড়ে থাকলেও হঠাৎ কেন কর্মীদের অবসরের মেয়াদ বাড়াচ্ছে কেন? অবসরের মেয়াদ না বাড়িয়ে ৭ লক্ষ শূন্যপদে নিয়োগ করা গেলে কয়েকটি পরিবার বেঁচে যেত না? অবসরের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব মানেই কি নিয়োগে ‘না’ মোদি সরকারের? উঠছে প্রশ্ন৷
অন্যদিকে, এই একই পথে হেটেছে বাংলার সরকার৷ আইনি জটিলতা থেকে নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসছে বাংলার চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ কর্মসংস্থান ইস্যুতে নানা বিতর্ক থাকলেও এবার অবসরের বয়স কমপক্ষে ৭০ বছর করতে নয়া বিল আনতে চলেছে রাজ্য৷
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই চেয়েছিলেন, তিনি চান উপাচার্যদের অবসরের বয়স বাড়ানো হোক৷ মুখ্যমন্ত্রীর সেই ইঙ্গিত এবার আইনি পরিবর্তন করতে বিধানসভায় বিল আনতে চলেছে রাজ্য৷ আইন পরিবর্তন করে উপাচার্যদের অবসরের বয়স ৭০ করার প্রস্তাব দিতে চলেছে রাজ্য৷ আইন পরিবর্তন করতে বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে তা কার্যকর করা হতে পারে বলে খবর৷
জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধন করে এই অবসরের বয়স বদল করা হবে৷ বিল অনুযায়ী, একজন উপাচার্যের বয়স ৬৫ বছর হয়ে গেলে, তাঁর কর্মদক্ষতা, শারীরিক ক্ষমতা ইত্যাদি দেখে সর্বোচ্চ দু’বছর বাড়ানো হতে পারে৷ রাজ্যপাল তথা আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠি ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে তা ঠিক করা হবে বলে খবর৷ তবে কোনও উপাচার্যকে একলপ্তে ৬৫ থেকে ৭০ বছর করে দেওয়া হবে না৷ দুই বা এক বছর করে বৃদ্ধি করা হবে৷
চলতি বছর ৭ জানুয়ারি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রফেসরদের অবসরের বয়স ৬২ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬৫ করা হবে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরদের অবসরের বয়স ৬৫ বছর থেকে বেড়ে করা হবে ৭০ বছর৷ ওই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিন, ‘‘শিক্ষকরা মানুষ তৈরির কারিগর৷ শিক্ষকদের অবদান অনস্বীকার্য৷ রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষকদের নিয়ে গর্ব করে৷’’