ক্রাইমিয়াতে কি দেখলেন জেলেনেস্কি? (Ukraine Crimea Oil Depot Strike)
দিল্লি: রাশিয়ার সবচেয়ে দামী সম্পদে হাত দিয়ে ফেলল ইউক্রেন! ক্রাইমিয়াতে কি দেখলেন জেলেনেস্কি? যুদ্ধ বন্ধ নয়, এসেছে বিরাট টার্নিং পয়েন্ট! এবার খেলা শুরু ইউক্রেনের, উল্টে গেল পুতিনের চাল?
ক্রাইমিয়ার মৌচাকে ঢিল ছুড়লো জেলেনেস্কি বাহিনী। রাশিয়ার কন্ট্রোলে থাকা ক্রাইমিয়ার তেলের ভাণ্ডারে হামলা চালাল ইউক্রেন। দাবি করছে কিয়েভ।
ক্রাইমিয়া দখল? (Ukrainian Forces Target Russian-Controlled Oil Depot)
তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় টা হল, ফিওদোশিয়ায় ওই তেলের ভাণ্ডার থেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ বাহিনীর জন্য জ্বালানি সাপ্লাই করা হতো। অতএব রাশিয়ার কন্ট্রোলে থাকা এই তেলের ভান্ডারে হাত দেওয়ার কারণে পুতিন যে রণক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে পড়লেন তা বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। যখন অস্বস্তি বাড়ছে রাশিয়া, তখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি বলছেন, ‘‘যুদ্ধ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে প্রবেশ করেছে।’’ যুদ্ধ শুরুর এত বছর পর, জলান আজকের মধ্যে আলাদাই কনফিডেন্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, শুধুই কি তেলের ভান্ডারে হামলা চালানোর টার্গেট ছিল জেলেনেস্কির? নাকি আসল উদ্দেশ্য ক্রাইমিয়া দখল?
যখন এই নিয়ে তীব্র জল্পনা শুরু, তখন মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে। ২০১৪ সালে এই ক্রাইমিয়ার দখল নিয়েছিল মস্কো। আর সেখানেই হামলা চালিয়ে পুতিনকে বড়সড় অস্বস্তিতে ফেলল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
যুদ্ধ শেষ হোক (Turning Point)
অবশ্য লুকিয়ে চুরিয়ে কিছু করছেও না ইউক্রেন। বার বার মস্কোর জ্বালানি কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে রাশিয়াকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়াই তাদের উদ্দেশ্য, এক বিবৃতিতে এটা স্পষ্ট জানানো হয়েছে ইউক্রেনের তরফে। অলরেডি যেটা জানা যাচ্ছে, আকাশপথে হামলায় রুশ বাহিনীর মজুত তেলের বড় অংশই নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, গুলি করে ১২টা ইউক্রেনীয় ড্রোন নামিয়েছে রুশ সেনা, টোটাল ২১টি ড্রোন পাঠিয়েছিল কিয়েভ।
গতবছর ধরে কনস্ট্যান্ট যুদ্ধ চলার পর সম্প্রতি মনে হয়েছিল রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে। ভারত এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। মনে করা হচ্ছিল পুতিনও চাইছেন এই যুদ্ধ শেষ হোক। কিন্তু এই মোক্ষম সময় পুতিনের চাল রীতিমতো ঘুরিয়ে রেখে দিল জেলেনেস্কির হঠাৎ এই আক্রমণ। শীত শুরুর আগে এই ঘটনা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দুশ্চিন্তা বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। প্রসঙ্গত, গত বছর হামলা চালিয়ে ক্রাইমিয়ার সেবাস্তিপোল বন্দরে রুশ বাহিনীর মজুত তেল নষ্ট করেছিল ইউক্রেন বাহিনী। আর এবার ক্রাইমিয়ার তেলের ভান্ডার। যে ক্রাইমিয়াতে একসময় আধিপত্য ছিল ইউক্রেনের।
হেলায় হারবেন ভ্লাদিমির পুতিন?(Geopolitics)
২০১৪ সালে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে ছোটখাটো সংঘর্ষের পরে দক্ষিণ ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ দখল করেছিল রুশ সেনা। পরে গণভোট করিয়ে ওই অংশকে রুশ ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়ে নিয়েছিল ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার। সামরিক দৃষ্টিতে ক্রাইমিয়ার অবস্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেখানকার কৃষ্ণসাগর উপকূলের সেবাস্তিপোল বন্দর শীতের সময়ও সচল থাকে। মূল রুশ ভূখণ্ডের কোনও বন্দরে সেই সুবিধা নেই। সমুদ্র ভেসে আসা বরফের চাঁইয়ের কারণে বছরভর সেগুলো সচল রাখা সম্ভব নয়।
তবে শুধু ক্রাইমিয়া নয়। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সেনা অভিযান শুরুর পরে দক্ষিণ ইউক্রেনের আর এক গুরুত্বপূর্ণ বন্দর খেরসনের দখল নিয়েছিল পুতিন-বাহিনী। কিন্তু গত নভেম্বরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সেনাদের প্রত্যাঘাতে পিছু হটতে হয় তাদের। যদিও ক্রাইমিয়ার মতোই খেরসনকেও গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে জুড়ে নিয়েছিলেন পুতিন।
খেরসনের পাশাপাশি বুচা, ইজ়িয়ুম, বোরোডিয়াঙ্কা, চেরনিহিভের মতো শহরও রাশিয়ার হাত থেকে ইতিমধ্যেই ছিনিয়ে নিয়েছে ইউক্রেন। মূল রুশ ভূখণ্ডের ক্রুস্কের বিস্তীর্ণ অংশও তাদের নিয়ন্ত্রণে। তাহলে এবার কি ক্রাইমিয়ার পালা? এভাবেই কি জেলারাস্কির আক্রমণে হেলায় হারবেন ভ্লাদিমির পুতিন?
আরও পড়ুন..
ইরান ইসরাইল যুদ্ধ : ভারতের ‘শিরে সংক্রান্তি’! তেল-খাবারের এতো দাম?
World – Ukraine Crimea Oil Depot Strike : Ukraine launches daring strike on oil depot in occupied Crimea, escalating tensions with Russia. Get the latest updates on the conflict and its global implications.