দারিদ্র দূরীকরণে দেশের শীর্ষে বাংলা, বলছে কেন্দ্রীয় সমীক্ষা

কলকাতা: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পারিবারিক কল্যাণ মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রাণাধীন সংস্থা ন্যাকো-র রিপোর্টে একের পর এক শিরোপা আসছে রাজ্যে৷ রবিবার বিশ্ব এইডস দিবসে এইচআইভি দূরীকরণে দেশের শীর্ষস্থান পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ৷ এবার দারিদ্রতা দূরীকরণে শীর্ষে৷ কেন্দ্রীয় সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১১-১২ থেকে ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে দারিদ্র দূরীকরণে সবচেয়ে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ৷ বুধবার ন্যাকো-র রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরেই ফেসবুক পেজে

imagesmissing

দারিদ্র দূরীকরণে দেশের শীর্ষে বাংলা, বলছে কেন্দ্রীয় সমীক্ষা

কলকাতা: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পারিবারিক কল্যাণ মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রাণাধীন সংস্থা ন্যাকো-র রিপোর্টে একের পর এক শিরোপা আসছে রাজ্যে৷ রবিবার বিশ্ব এইডস দিবসে এইচআইভি দূরীকরণে দেশের শীর্ষস্থান পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ৷ এবার দারিদ্রতা দূরীকরণে শীর্ষে৷ কেন্দ্রীয় সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১১-১২ থেকে ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে দারিদ্র দূরীকরণে সবচেয়ে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ৷

বুধবার ন্যাকো-র রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরেই ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট রাজ্যবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘গরিব মানুষের জন্য রাজ্য সরকারের একাধিক সামাজিক প্রকল্পের ফলেই এই কৃতিত্ব অর্জন করা সম্ভব হয়েছে৷’’

ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে রাজ্যের নাম৷ এমনকি তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত একাধিক প্রকল্প ছিনিয়ে এনেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও৷ এবার শীর্ষে দারিদ্র দূরীকরণে৷ কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, জল ধরো-জল ভরো, বাংলার বাড়ি-সহ একাধিক প্রকল্পে কাজ করেছে রাজ্য সরকার৷ দারিদ্রতা দূরীকরণে এই প্রকল্পগুলি ইতিবাচক ভূমিকা নেওয়ায় স্বভাবতই খুশি মুখ্যমন্ত্রী৷ ১৯৮০-এর দশকে ভারত যখন থেকে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পেয়েছে দারিদ্র্যের হার৷

বুধবার ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকাল অফিস (এনএএসও) দ্বারা প্রাপ্ত ব্যয়সংখ্যার একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রতিবেদন বিশ্লেষন করে লাইভ মিন্টের সমীক্ষায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১১-১২ সাল থেকে ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে পর্যন্ত যেখানে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্রতা ৪% বেড়ে ৩০% হয়েছে তখন সেখানে শহরাঞ্চলের দারিদ্রতা ৫ শতাংশ কমে ৯ শতাংশ শতাংশে নেমে আসে৷ গ্রামাঞ্চলের লোক সংখ্যা বাড়তে থাকায় ২০১৭-১৮ সালে এখানে দারিদ্রতা মোটের ওপর বেড়ে দাঁড়ায় ২৩ শতাংশ৷ এর ফলে তিন কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যায় এবং আগের৷
নকো দ্বারা পরিচালিত সমীক্ষার তথ্য অনুসারে বড় রাজ্যগুলির মধ্যে, বিহারে ২০১১-১২ এবং ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে ভারতের দারিদ্রতার হার সর্বাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে, দারিদ্র্যের হার পুরোপুরি ১৭ শতাংশ পয়েন্ট বেড়ে ৫০.৪৭শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷ ঝাড়খণ্ড (৮.৬ শতাংশ পয়েন্ট বা পিপিটিএস বৃদ্ধি) এবং ওড়িশা (৮.১ পিপিটিএস বৃদ্ধি) অন্যান্য বড় বড় রাজ্য যেখানে দারিদ্র্যের হার বেশি মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছিল৷ দারিদ্র্যের হার জনসংখ্যার (শতাংশ) ভাগকে বোঝায় যা দারিদ্র্যসীমার নীচে রয়েছে৷ যা ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায় ৪০ শতাংশের বেশি৷

পূর্ব ও উত্তর-পূর্বের বেশ কয়েকটি রাজ্যে গত কয়েক বছরে দারিদ্র্যের তীব্র বৃদ্ধি পেয়েছে তবে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি (কর্ণাটক বাদে) দারিদ্র্যের হার কম করতে সক্ষম হয়েছে৷ ২০১১-১২ এবং ২০১৭-১৮ সালের হিসেব অনুযায়ী- পশ্চিমবঙ্গ (৬ পিপিটিএস পতন), গুজরাট (৫ পিপিটিএস পতন), এবং তামিলনাড়ুর (৫ পিপিটিএস পতন) মত বড় রাজ্যগুলিতে দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি হ্রাস পেয়েছে৷ সেখানে উন্নত রাজ্যগুলির মধ্যে মহারাষ্ট্র একই সময়ে দারিদ্র্যের সর্বাধিক বৃদ্ধি পেয়েছিল (প্রায় ৫ পিপিটিএস)৷

যদিও সমালোচকরা মনে করেন যে এনএসওর এই পরিসংখ্যান অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ছোট এবং বড় অর্থনৈতিক সূচকগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, অন্যদিকে সরকারী কর্মকর্তারাও উল্লেখ করেছেন যে নরেন্দ্র মোদী সরকার যে নীতিগুলি গ্রহণ করেছে তাতে পারিবারিকভিত্তিতে পরিসংখ্যান গুলি সেই অর্থে কার্যকরী হতে পারে না৷

অন্যদিকে, অর্থনীতিবিদরা যারা পরিবার ভিত্তিক পরিসংখ্যানকে বেশি গুরুত্ব দেন, তারা মনে করেন যে সরকারী বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রায়শই ভারতের গ্রামীণ এবং ঘরোয়া অর্থনৈতিক গতিবিধির পরিসংখ্যানগুলি সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়৷ তাই, দারিদ্রতার সূচক’ নির্ধারণ করতে তারা গ্রাহকসমীক্ষা অর্থনীতির ওপরেই বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছেন দারিদ্রতা সূচক’ নির্ধারণ করতে যে বিষয়টিকে সাধারনত হিসেবের বাইরে রাখা হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *