congress
কলকাতা: যত কাণ্ড পাহাড়ে! বড় চমক দেখা যেতে পারে সেখানে। ঘটনা হল দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র এবার ধরে রাখা নিয়ে নিশ্চিত নয় বিজেপি। গত তিনটি লোকসভা নির্বাচনে জয়ের সুবাদে পাহাড় ধরে রেখেছে বিজেপি। কিন্তু এবার তাদের জন্য কাজটা বেশ কঠিন। যে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি এতদিন ধরে জিতে এসেছে, তার অধিকাংশ তারা পূরণ করতে পারেনি বলে অভিযোগ। তাই একটি সূত্রে খবর, এবার বিজেপি দার্জিলিংয়ে প্রার্থী বদল করতে পারে। প্রার্থী হতে পারেন প্রাক্তন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। কিন্তু বিজেপি যদি হারে সেখানে তাহলে জিততে পারে কোন দল? তৃণমূল জিতবে সেখানে? না, নিশ্চিত করে সেটা বলা যাচ্ছে না।
কারণ ২০ বছর, অর্থাৎ দু’দশক পর পাহাড়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখছে কংগ্রেস। ২০০৪ সালে একক শক্তিতেই দার্জিলিং লোকসভায় জিতেছিল কংগ্রেস। জয়ী হয়েছিলেন দাওয়া নারবুলা। কিন্তু এরপর ক্রমশ শক্তি কমেছে কংগ্রেসের। উল্টোদিকে পাহাড়ে যে যখন শক্তিশালী হয়েছে তাদের হাত ধরে ক্রমশ জাঁকিয়ে বসেছে বিজেপি। কিন্তু এবার পরিস্থিতির বদল ঘটেছে। বিজেপির উপর তিতিবিরক্ত পাহাড়বাসী। এবার তারা ভরসা রাখতে শুরু করেছে কংগ্রেসের উপর। ঘটনা হল কিছুদিন আগেই পাহাড়ের অন্যতম শক্তিশালী নেতা হিসেবে পরিচিত বিনয় তামাং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর হাত ধরে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। আর তখন থেকেই বদলাতে শুরু করেছে সমীকরণ।
কংগ্রেসের টিকিটে বিনয় দার্জিলিং লোকসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এটা কার্যত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। তবে একা বিনয়ের ক্ষমতা নেই পাহাড়ে জেতার। তবে কি কারণে পাহাড়ে জয়ের স্বপ্ন দেখছে কংগ্রেস? আসলে অনীত থাপা ও মন ঘিসিং বাদে পাহাড়ের প্রায় সমস্ত ছোট বড় দল এবার কংগ্রেসকে সমর্থন করতে তৈরি। শুধু তাই নয়, পাহাড়ের বেশ কয়েকটি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সদ্য দিল্লিতে গিয়ে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এরপরই পাহাড়ের অন্যতম শক্তিশালী দল হামরো পার্টির নেতা অজয় এডওয়ার্ড কংগ্রেসকে সমর্থন করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। গত লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং কেন্দ্রে কংগ্রেস একা লড়ে ৬৫ হাজার ও সিপিএম একা লড়ে ৫৫ হাজার ভোট পেয়েছিল। এবার কংগ্রেসের শক্তিশালী প্রার্থী থাকলে সিপিএম যে প্রার্থী দেবে না তা স্পষ্ট। এর উপর থাকছে পাহাড়ের প্রায় সমস্ত শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের সমর্থন।
সব মিলিয়ে কংগ্রেস এই আসনটিতে জেতার জায়গায় চলে এসেছে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে। অন্যদিকে প্রার্থী থাকবে তৃণমূলেরও। তবে তৃণমূল মূলত দার্জিলিং লোকসভার অন্তর্গত সমতলে যে চারটি বিধানসভা রয়েছে সেখান থেকেই বেশি ভোট পাওয়ার আশা করছে। অন্যদিকে পাহাড়ের তিনটি বিধানসভায় বড় ব্যবধান গড়তে চায় কংগ্রেস। সেই সঙ্গে সমতলের চারটি বিধানসভাতেও সিপিএমকে সঙ্গে নিয়ে তুল্যমূল্য লড়াই দিতে চাইছে হাত শিবির। আর সেই সূত্রেই পাহাড়ে এবার ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে চলেছে বলে রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন। তবে পাহাড় রাজনীতির হাল হাকিকত যারা জানেন তাঁরা মনে করছেন বিজেপি ও তৃণমূলের তুলনায় কংগ্রেস সামান্য হলেও এবার এগিয়ে থাকবে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে। তাই আগামী কয়েক মাসে বিষয়টি কোন দিকে গড়ায় এখন সেটাই দেখার।